Home » সোনাগাজীতে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী, কীট না থাকায় পরীক্ষা বন্ধ

সোনাগাজীতে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী, কীট না থাকায় পরীক্ষা বন্ধ

by আজকের সময়

সোনাগাজী প্রতিনিধি :

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেসসহ বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ডেঙ্গু পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। ফেনীর সোনাগাজীতে কিট-সংকটের কারণে চার’দিন ধরে এ অবস্থা বিরাজ করছে। এতে জ্বরে আক্রান্ত রোগীদেরকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে দুই হাজার কিটের চাহিদা উল্লেখ করে সিভিল সার্জন ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। কিট পাওয়া গেলে আবারো ডেঙ্গু পরীক্ষা শুরু হবে।

সংশ্লিষ্ট ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত দুই মাস ধরে উপজেলার প্রতিটি ঘরে ঘরে জ্বর, সর্দি ও কাশিসহ মাংসপেশিতে ব্যথা নিয়ে প্রতিনিয়ত শত শত রোগী হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে এতদিন ডেঙ্গু পরীক্ষার কিট থাকলেও রোববার থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ পৌর শহরের বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ডেঙ্গু পরীক্ষার কিট-সংকট দেখা দেয়। এতে রোগীরা জ্বর নিয়ে হাসপাতাল ও ক্লিনিকে পরীক্ষার জন্য গিয়েও ফিরে যান। অনেকে জেলা শহরের হাসপাতাল ও ডায়গনস্টিক সেন্টারে ছুটছেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানায়, চলতি বছর জানুয়ারি থেকে ২৩ আগস্ট পর্যন্ত ৩২৪ জনের পরীক্ষায় ১০ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। এরমধ্যে চলতি আগস্ট মাসে গত শনিবার পর্যন্ত ১৬০ জনের ডেঙ্গু পরীক্ষায় ৫ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। তবে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে আরও বেশি পরীক্ষাসহ ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। ওই হাসপাতালের বহির্বিভাগ ও জরুরি বিভাগ থেকে অন্তত ৫৯৫ জন রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে প্রায় তিনশো রোগীর জ্বর, শরীর ব্যথা, সর্দি-কাশি ও বমি ছিল।

মঙ্গলবার বিকেলে পৌরসভার তুলাতলী এলাকার বাসিন্দা আবদুর রহিম তার তিন বছরের মেয়ে ইসমাত জাহানকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেঙ্গু পরীক্ষা করাতে যান। তিনি বলেন, হাসপাতালে গিয়ে জানতে পারেন কিট নেই। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ নিয়ে বাড়ি ফিরে যান। পরীক্ষা করতে না পারায় জ্বর নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন তিনি।

উপজেলার চর চান্দিয়া ইউনিয়নের উত্তর চর চান্দিয়া এলাকার বাসিন্দা ফাতেমা বেগম বলেন, চারদিন ধরে তার প্রচণ্ড জ্বর। একইসঙ্গে শরীর ব্যথা ও বমি হচ্ছে। উপজেলা হাসপাতালে গিয়ে ডেঙ্গু শনাক্তের পরীক্ষা করতে পারেননি। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

সোনাগাজী ক্লিনিকের স্বত্ত্বাধিকারী ডা. মো. নুর উল্যাহ বলেন, গত দুই মাসে তার ক্লিনিকে প্রায় দুই শতাধিক লোকের ডেঙ্গু পরীক্ষা করা হয়েছে। এতে চার নারীসহ ১৫ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। তারা ঢাকা ও চট্টগ্রামে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হওয়ার চেষ্টা করছেন। তবে গত কয়েকদিন ধরে ক্লিনিকে ডেঙ্গু পরীক্ষার কিটের সংকট দেখা দিয়েছে। এজন্য গত তিনদিন পরীক্ষা বন্ধ।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ল্যাব টেকনোলজিস্ট মো. মাহবুব আলম বলেন, কিট সংকটের কারণে রোববার ও সোমবার দুইদিন হাসপাতালে ডেঙ্গু শনাক্ত করতে আসা রোগীদের পরীক্ষা হয়নি। হঠাৎ করে কিট শেষ হয়ে যাওয়ায় গত বৃহস্পতিবার সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে ৩০টি কিট দেওয়া হয়। যা একদিনেই শেষ হয়ে গেছে।

সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা উৎপল দাশ বলেন, হাসপাতালটিতে দুই হাজার কিট সরবরাহের জন্য চাহিদাপত্র দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আগত রোগীদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে জেলা সদর হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

আরো খবর