শুভ জন্মদিন কলামিস্ট ও কবি ইমরান ইমন
সোনার চামচ মুখে দিয়ে না জন্মালে বুঝি সোনার ছেলে হয়না? হয়তো! আমার কাছে তাই মনে হয় ! ওকে দেখলে বা ওর লেখার মান বিচার বিশ্লেষণ করলে যে করুর ওকে আদর করতে ইচ্ছে করবে। আমি ইমরান ইমন এর কথাই বলছি! ইমরান ইমন সবেমাত্র যৌবনে পদার্পণ করেছেন। বাস্তবতার ভিত্তি তার এখনো গড়ে ওঠার সময়ই হয়নি। অথচ এখনই তার মস্তিষ্কের স্নায়ুকোষ উতপ্ত থাকে দেশের ভালোমন্দ, সুখ দুঃখ, নিয়ে কলম ধরার জন্য ! এতোটুকুন বয়সে কোন বিখ্যাতগণ এতোটা প্রবল আগ্রহ আর উচ্ছ্বাস নিয়ে দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য উদগ্রীব হয়ে কলম ধরেছেন তা আমার জানা নেই। এখনো পড়াশোনাই শেষ হয়নি তার!
ইমনের গবেষণাধর্মী প্রবন্ধগুলো আমাকে ভীষণ মুগ্ধ করে ! সুদূর সৌদি আরবে অবস্থানরত কবি সবুজ আহমেদও আমাকে বলেছেন ইমনের প্রতি তাঁর মুগ্ধতার কথা । সবুজ আহমেদ এর সাথে ইমনকে নিয়ে বেশ আলোচনাও হয়েছে আমার ! অনেকেই এখন ইমরান ইমন এর প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে থাকেন। ওর প্রবন্ধসমূহ দেশের বর্তমান পরিস্থিতি, শিক্ষাব্যবস্হা, সমাজ, রাষ্ট্র, মাদকাসক্ত তরুণ প্রজন্মের জন্য তার আকুলতা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা দেয়।
লেখালেখির হাতেখড়ি তার ছোটবেলা থেকেই। কবিতা দিয়েই লেখালেখির মতো সৃজনশীল অঙ্গনে হাতেখড়ি হয়েছিল। পত্রিকায় লেখালেখি শুরু ‘প্রথম আলো’ দিয়ে। প্রথম আলো ছাড়াও এখন দেশের শীর্ষ জাতীয় বাংলা ও ইংরেজি দৈনিকগুলোর সম্পাদকীয় / উপসম্পাদকীয়তে নিয়মিত কলাম লিখে যাচ্ছেন এই উদীয়মান তরুণ। এর পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্পণ করে ক্যাম্পাস সাংবাদিকতায়ও নিজেকে জড়িয়েছেন ।
শুরুর দিকে লেখালেখি করতে গিয়ে অনেক হোঁচট খেয়েছেন, অনেকে নিরুৎসাহিত করেছেন, বাঁকা কথা বলেছেন। কিন্তু তিনি দমে যাননি। বরং সেসব তুচ্ছতাচ্ছিল্যকে গায়ে না মেখে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছেন । এখন সে সমস্ত মানুষরাই তাকে অভিবাদন জানান। এজন্য তিনি এখন নিজেকে একজন গর্বিত মানুষ মনে করেন এবং পরম সুখের ব্যাপার মনে করেন । পৃথিবীর মানুষ যখন বলবে “ইমন তুমি এটা করতে পারবে না।” সেটা করে দেখানোর মতো বড় সফলতা পৃথিবীতে আর কিছু হতে পারে না।
এসব কথা শুনে শুনে তার ভেতরে একটা অদ্ভুত বিশ্বাস জন্মেছিলো যে, তিনি ভেতর থেকে দেখতেন- একদিন তিনি তার কাঙ্ক্ষিত স্বপ্নচূড়ায় আরোহন করবেনই, লেখালেখিতে সফল হবেনই!
যদিও এক্ষেত্রে তিনি এখনো পূর্ণাঙ্গ সফল না, এখনো অনেক পথ পাড়ি দেওয়া বাকি। তবে এতো কম বয়সে তিনি যতটুকুতে গিয়েছেন তার জন্য তিনি খুব খুশি। বড় বড় পত্রিকার সম্পাদকরা যখন বলেন- “আপনার লেখার হাত অত্যন্ত পরিপক্ক, লেখার মান অনেক ভালো, আপনি এখন দেশসেরা কলামিস্টদের একজন। তবে আপনাকে লেখা অব্যাহত রাখতে হবে।”
ইমন এসব উৎসাহ তার কলম চালানোর শক্তি থেকেই পেয়েছেন ।
তিনি বলেন, আমি লেখা অব্যাহত রাখতে চাই। আমার এখনো অনেক লেখা বাকি, আমাকে প্রচুর লিখতে হবে।
পত্রিকায় কলাম লেখা আর সাংবাদিকতার পাশাপাশি কবিতার চাষাবাদও করে যাচ্ছেন নিয়মিত। কারণ কবিতাই তার ভালোলাগা-মন্দলাগা, সুখ-দুঃখ, প্রেম-বিরহের আশ্রয়স্থল।
ইমনের প্রিয় খাবার – বাদাম, কফি।
প্রিয় শখ- লেখালেখি এবং ভ্রমণ।
প্রিয় খেলা – দাবা এবং ব্যাডমিন্টন।
প্রিয় রঙ- সাদা।
প্রিয় লেখক – উইলিয়াম শেক্সপিয়ার। তাঁর যে বইটি ইমনের মনে দাগ ফেলেছে- রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট।
ইমন বলেছেন, “পড়াশোনা শেষ করে যে পেশাতেই থাকিনা কেন, লেখালেখি ছাড়বোনা, লেখালেখি আমার স্নায়ুর করোটিতে মিশে গেছে! ”
ইমরান ইমন ২০০০ সালের ২৮ জানুয়ারি ফেনী জেলার ফুলগাজীর ফতেপুর গ্রামে পিতা মো. ইলিয়াস এবং মাতা. জোছনা আক্তার এর কোল আলো করে এই ধরাধামে পদাপর্ণ করেন। তার প্রাথমিক শিক্ষা জীবন শুরু করেন এলাকার এম.জেড. কিন্ডারগার্টেন স্কুলে। এসএসসি সম্পন্ন করেন আলী আজম স্কুল এ্যান্ড কলেজ থেকে। এইচএসসি করেন ফেনী সরকারি কলেজ থেকে। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি বিভাগ নিয়ে অনার্স করছেন। ইমরান ইমনকে এখনদেশের অনেকেই জেনেছেন। আগামীতে তিনি একজন নামকরা মানুষ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করবেন এই প্রত্যাশা আমরা করতে পারি। আজ ২৮ জানুয়ারি ইমন পৃথিবীতে এসেছিলেন। আজই তার সেই মহেন্দ্রক্ষণ চলে এলো। আমার পর্যবেক্ষণে এই কমবয়সী কলামিস্ট একদিন আরও অনেক বড় মানুষ হবে নিঃসন্দেহে। তাকে কবি হিসেবেও নিয়মিত দেখতে চাই।
শুভ জন্মদিন ইমরান ইমন। আজ প্রত্যুষে পৃথিবীতে যতোগুলো ফুল ফুটেছিল, সবগুলো ফুল ইমরান ইমন এর জন্য ফুলার্ঘ নিবেদন করছি। আলোকিত মানুষ হয়ে দেশ ও দশের মঙ্গলময় আলোকবর্তিকা হয়ে উঠুন। শুভ জন্মদিন। শুভ হোক আগামী পথচলা।