এম শরীফ ভূঞা, ফেনী :
কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি আর ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ফেনীর মুহুরী নদীর পানি পরশুরাম পয়েন্টে বিপৎসীমার ১০০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সোমবার (৭ আগস্ট) ভোরের দিকে বাঁধে ভাঙন দেখা দেয়।
ফলে ফুলগাজী সদরের উত্তর বরইয়া এবং উত্তর দৌলতপুর এলাকায় বেড়িবাঁধে ভাঙন ধরে পানি লোকালয়ে ঢুকছে। ফেনীর ফুলগাজীর সদর ইউনিয়নের উত্তর বরইয়া আর উত্তর দৌলতপুর গ্রামের বেড়িবাঁধের দুটি স্থানে ভাঙন ধরেছে। এতে ৬ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
পানির প্রচণ্ড বেগে বাঁধের আশপাশের উত্তর বরইয়া, বনিক পাড়া, বিজয় পুর, কিসমত বিজয়পুর, বসন্তপুর, জগতপুরসহ ৬ টি গ্রামে বানের পানি ঢুকে পড়ে । তলিয়ে গেছে আমনের বীজতলা ।
ফুলগাজী নজরুল একাডেমীর সভাপতি জহিরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর জানান, লোকালয়ে ঢুকছে পানি। পানির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে রাস্তাঘাট, বাড়িঘর, ফসলি জমি ও মাছের ঘের। ইউনিয়ন পরিষদ ও কাঁচাবাজারে পানি উঠেছে।
স্থানীয় শিক্ষক ইকবাল আহমেদ চৌধুরী জানান, বিগত এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ভারতীয় পাহাড়ি ঢলের পানির চাপে ফুলগাজীর মুহুরী নদী রক্ষা বাঁধে এবং পরশুরামের কহুয়া নদী রক্ষা বাঁধে ভাঙনে নিঃস্ব হচ্ছেন কৃষকরা।
ঝুঁকিতে রয়েছে ১২২ কিলোমিটারের বাঁধের বেশ কয়েকটি স্থান। নদীর উভয় পাড়ের ১২২ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের তীরবর্তী এলাকার শত শত পরিবারের হাজার হাজার মানুষের এখন দিন-রাত কাটছে বাঁধ ভেঙে বন্যার কবলে পড়ার আতঙ্কে। বাঁধে ভাঙন ধরার বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ সহকারী প্রকৌশলী মো. মনির আহমদ মনির আহম্মদ নিশ্চিত করেন।
এলাকাবাসী জানান, সোমবার ভোরে বাঁধের অংশে ভাঙন দেখা দিলে গাছ কেটে, মাটি দিয়ে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করা হয়, কিন্তু পানির চাপে তা ব্যর্থ হন তারা।
ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া ভূঞা বলেন, মুহুরী নদীর পানির চাপ এখনো কমেনি। নদীর আশপাশের মানুষের মধ্যে ভাঙন আতঙ্ক বাড়ছে। দুর্গত এলাকায় বিতরণের জন্য শুকনো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
প্রতি বছর কয়েক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। বর্ষা শেষে বরাদ্দ আসে নতুন অস্থায়ী বাধ সংস্কার করা হয়। বর্ষা এলেই তা আবার ভাসিয়ে নিয়ে যায়। কিন্তু এর জন্য স্থায়ী কোনো সমাধান নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ নদীপাড়ের বসবাসকারীদের।