ফুলগাজীর একজন শাইখ সিরাজ জহিরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর । সর্বদা হাসি মুখে থাকা এই মানুষটিকে আমি মনে করি ফুলগাজীর শাইখ সিরাজ! কারণ তিনি তাঁর ফেসবুক পেইজে প্রায় প্রতিদিন কৃষি উৎপাদন, মৎস উৎপাদন বিষয়ক ছবি ও ভিডিও পোস্ট করেন। যা নিঃসন্দেহে উৎসাহব্যঞ্জক।
তাছাড়া তিনি একজন ভ্রমন পিপাসু মানুষ। দেশের যে প্রান্তেই যান না কেনো ওইসব দর্শনীয় স্থানের ভিডিও নিয়ে হাজির হন। তাছাড়া দীর্ঘদিন জড়িত আছেন সাংবাদিকতার সাথে। তাঁর যে গুণটা আমাকে বেশী আকৃষ্ট করে তা হলো – কতো কথা বলে তাঁকে ক্ষ্যাপানোর চেষ্টা করেছি, কিন্তু’ তিনি কখনও বিভ্রান্ত হননি, ক্ষুদ্ধ হননি। চরম ধৈর্যশীলতার এক মূর্ত প্রতীক এই জাহাঙ্গীর।
তার সাথে আমার পরিচয় সেই ১৯৯২ – ৯৩ সাল থেকে। তখনকার সময়ে ফুলগাজীর সবচে স্ট্যান্ডার্ড ফটো স্টুডিও এবং ভিডিও শোরুম ছিলো তাঁর। সেটার নাম ছিলো স্টুডিও ময়নামতি এন্ড ভিডিও হাউজ। তাঁর ওই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছিলো মেইনরোডে জহির প্লাজার নিচতলায় বর্তমানে স্টার লাইন কাউন্টারের দোকানটির স্থানে। কতো ভিডিও ক্যাসেটে সিনেমা ও ভিডিও সেট তাঁর ওই দোকান থেকে ভাড়া নিয়েছি তার কোনও হিসাব নেই। নিজে সারাক্ষণ দোকানে বসে বসে সাদাকালো ছবি আর্ট করতেন। আমার লেখা “মৃত্যুঞ্জয়ী আজিজুল হক” শিরোনামে মরহুম আজিজুল হক চেয়ারম্যান সাহেবের কফিনে মোড়ানো লাশের যে ছবিটা আপনারা সবসময় ফেসবুকে দেখতে পান সেই ঐতিহাসিক ছবিটি এই জাহাঙ্গীর ভাইয়ের নিজের হাতে তোলা। আমার চাচা মরহুম আজিজুল হক চেয়ারম্যান সাহেবের প্রতি একজন মহান ত্যাগী নেতা হিসেবে জাহাঙ্গীর ভাই সবসময় শ্রদ্ধা পোষণ করতেন।
ব্যক্তিজীবনে তিনি ইঞ্জিনিয়ারিং লাইনে পড়াশোনা করলেও তিনি বনে গেছেন সংবাদকর্মী ও একজন কৃষিপ্রেমী মানুষ হিসেবে। তাছাড়া গান ও অভিনয় দিয়ে সকলকে মাতিয়ে রাখতে পটু । দীর্ঘদিন পরিচালনা করে আসছেন শিল্প সাহিত্য অঙ্গনের অবিচ্ছেদ্য সংগঠন “নজরুল একাডেমী”, ফুলগাজী।
নিজের রয়েছে একটি হোন্ডা যা তিনি নিয়মিত চলাচলে ব্যবহার করেন। বহুমুখী কর্মকান্ডে জড়ালেও আমি মনে করি তিনি আর্থিক ভাবে এতোটা স্বচ্ছল হতে পারেননি। তবুও তাঁর চোখেমুখে সর্বদা হাসির ছাপ।
অনেক জায়গায় ঘুরে বেড়ানো, অনেক শ্রেণিপেশার মানুষের সাথে মেশার এমন সৌভাগ্য সকলের হয়ে ওঠে না, যেটার সৌভাগ্যবান ভাগীদার হয়েছেন ।
– মো: সেলিম, শিক্ষক।