এম শরীফ ভূঞা, ফেনী :
চলতি মৌসুমে ফেনী জেলার বিভিন্ন প্রান্তে নতুন করে কুল বাগান বেড়েছে। পরিকল্পিত বাগান, বাড়ির আঙিনা ও ছাদ বাগানে এর চাহিদা বেড়েছে। এ মৌসুমে উৎপাদন হবে এক হাজার মেট্রিক টনের বেশি কুল, যার বাজার মূল্য অর্ধকোটি টাকার বেশি। এটি এ জনপদের জন্য আশার আলো মনে করছেন স্থানীয়রা।
ফেনীতে বাণিজ্যিকভাবে প্রসার হচ্ছে পুষ্টিকর ফল কুলের আবাদ। ভরা মৌসুমে কাঁচা-পাকা কুলে থোকায় থোকায় ভরে গেছে বাগানের গাছগুলো। বলসুন্দরি, কাশ্মীরি ও টক-মিষ্টি কুলের ব্যাপক চাহিদা থাকায় জেলায় ছোট-বড় বাগান গড়ে উঠেছে। এর আগে অন্য জেলার কুল এ অঞ্চলের চাহিদা মেটালেও এবার ফেনীর উৎপাদিত কুলের চাহিদা বেড়েছে। অল্পসময়ে লাভজনক হওয়ায় কৃষক ও শিক্ষিত বেকার যুবকরা ঝুঁকছেন ফলটি চাষে।
জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০২২-২৩ মৌসুমে জেলায় কুলের আবাদ হয়েছিল ৮৬ হেক্টর জমিতে। তখন ফলন এসেছিল ৯৩৮ মেট্রিক টন। চলতি ২০২৩-২৪ মৌসুমে ৯০ হেক্টর জমিতে কুলের আবাদ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে এক হাজার ৮০ মেট্রিক টন।
উপজেলা উপসহকারি উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মতিউর রহমান মানিক জানান, প্রতিকেজি কুল বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১৫০ টাকায়। লক্ষ্যমাত্রার আলোকে উৎপাদন হলে বাজার দাঁড়াবে প্রায় অর্ধকোটি টাকার বেশি।
জেলা সদরের কালিদহ ইউনিয়নের কালিদাস পাহালিয়া নদী তীরের কে পাহালিয়া অ্যাগ্রো পার্কে ১০ একর জমিতে এক হাজারের বেশি গাছের বাগান করেছেন স্থানীয় কয়েকজন উদ্যোক্তা। বিগত বছর তারা ১০ লক্ষাধিক টাকার কুল বিক্রি করলেও এবার সেই লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫ লাখ টাকা। বাগানটির উদ্যোক্তারা জানান, নদী পাড়ের পরিত্যক্ত খালি জমিকে কাজে লাগিয়ে তারা বাগানটি করেছেন এবং ফলনও মিলছে ভালো। উদ্যোক্তারা জানান, দুই বছর মিলিয়ে ২৫ লক্ষাধিক টাকার ফলনের আশা করছেন তারা।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আবু তৈয়ব জানান, যেসব জমিতে ধান-সবজি হয় না কিংবা পতিত, সেসব জমিকে কাজে লাগিয়ে কুলের বাণিজ্যিক আবাদ করা যায়। এক্ষেত্রে কৃষি বিভাগ পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করে থাকে।
দাগনভূঞা প্রেসক্লাবের প্রশিক্ষণ সম্পাদক এটিএম আতিকুল ইসলাম জানান, বাগানে এসে নির্ভেজাল পুষ্টিকর বিভিন্ন রং ও স্বাদের কুল পেয়ে উচ্ছ্বাসিত। উৎপাদিত এসব কুল বাজারে নিতে হয় না। দূরদূরান্ত থেকে ক্রেতারাই বাগানে এসে কিনে নিয়ে যেতে দেখলাম, আমরাও দেখতে এসে নিলাম। বাজারের কুলের চাইতে বাগানের এসব কুল তাজা, স্বাদও বেশি।
কম খরচে কুল আবাদে বেশি লাভ, একহাজার মেট্রিক টন কুল উৎপাদন
১০৩