কোম্পানীগঞ্জ প্রতিনিধি :
জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক- ২০২৪ এ নোয়াখালী জেলায় শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষক হওয়ার গৌরব অর্জন করেন মুহাম্মদ আবদুল্যাহ নয়ন।
তিনি নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থানারহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। ২০১৪ সালে যোগদানের পর থেকে তিনি অত্র বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান উন্নয়নে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, আসলে শ্রেষ্ঠ হওয়ার জন্য কখনও কোনো কাজ করিনি। নিজের পেশাগত দায়িত্ব, কর্তব্য ও ব্যক্তিগত আনন্দ থেকেই কাজ করি। পরিস্থিতি যেমনি হোক পেশাগত দায়িত্বকে গুরুত্ব দিয়ে থাকি। আমার পেশা নিয়ে আমি অনেক গর্বিত। সকল শিক্ষার্থী আমার নিজের সন্তানের মতো। দিনের সেরা সময়টুকু আমি আমার শিক্ষার্থীদের সাথে শ্রেণিকক্ষে উপভোগ করি। ওদের বুকভর্তি নিখাঁদ ভালোবাসা। এত মুগ্ধতা আর বিশুদ্ধতার আনন্দ পৃথিবীর কোথাও নেই।
একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমার শিক্ষার্থীদের যোগ্য, দক্ষ বৈশ্বিক নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলাই আমার একমাত্র লক্ষ্য। মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়নই আমার একমাত্র অঙ্গীকার। শ্রম, কর্ম, আর আন্তরিকতা দিয়ে মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়নে কাজ করে যেতে চাই, সকলের দোয়াও ভালোবাসা প্রত্যাশী।
তিনি একজন মেধাবী শিক্ষক হিসেবে সুপরিচিত। ইতোমধ্যে তিনি পেশাগত ও লেখালেখিতে সর্বমহলে ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছেন। তিনি ২০২৩ সালেও উপজেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে জেলা প্রর্যায়ে অংশ গ্রহণ করেছেন। তিনি ২০২৩ সালে বাংলা বিষয়ভিত্তিক মাস্টার ট্রেইনার ও নির্বাচিত হয়ে কুমিল্লা পিটিআইতে সফলতার সহিত প্রশিক্ষণ গ্রহণ শেষে উপজলেয়া পর্যায়ে এসে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন।
একাধারে লেখক ও ছড়াকার । প্রাথমিক শিক্ষা ও আর্থসামাজিক বিষয় নিয়ে তার কয়েকটি লেখা প্রকাশ হয়েছে। প্রতিনিয়ত শিক্ষা বিষয়ক ও সামাজিক সচেতনতা বিষয়ে জাতীয় দৈনিক ও স্থানীয় পত্রিকায় কলাম এবং প্রবন্ধ লিখে থাকেন। তার লেখনী এরইমধ্যে শিক্ষক সমাজের কাছে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে।
তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সমাজবিজ্ঞান বিষয়ে অনার্সসহ মাস্টার্স ডিগ্রিধারী। পেশাগত প্রশিক্ষণ ডিপ্লোমা ইন প্রাইমারি এডুকেশন (ডিপিএড) সিজিপিএ ৪ এর মধ্যে ৩.৫৯ পেয়ে মাইজদী পিটি আই এর ১০১৯-২০ শিক্ষা বর্ষে ২০৪ জনের মধ্যে ১১তম স্থান অর্জন করেন। এছাড়াও তিনি আইসিটিতে দক্ষ শিক্ষক হিসেবেও বেশ পরিচিত।
প্রায়োগিক শিক্ষার বিস্তারে ও যথাযথভাবে শ্রেণিকার্যক্রমের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যেও তার যথাযথ স্বাক্ষর রেখে চলেছেন।
নোয়াখালী জেলার শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষক নির্বাচিত হওয়ায় তিনি সকল শিক্ষক-সহকর্মী, জেলা-উপজেলার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও মা-বাবা ভাই, স্ত্রী-কন্যাসহ শুভানুধ্যায়ী সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন এবং সকলের দোয়া চান, যাতে আগামী দিনগুলোতে উত্তরোত্তর সফলতা বজায় রাখতে পারেন।
২০২৪ সালে জেলায় শ্রেষ্ঠত্বের পদক প্রাপ্ত অন্যান্য শিক্ষকরা হলেন- শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিকা হলেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট এসএম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা জনাব কুলসুম আক্তার শারমিন। শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক হলেন সেনবাগ উপজেলার কাদরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আল আমিন। সুকান্ত নন্দী। শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষিকা হলেন লাকী সাহা। তিনি প্রধান শিক্ষক, নওয়াবগঞ্জ,সোনাইওমুড়ীতে কর্মরত আছেন। শ্রেষ্ঠ কাব শিক্ষক রতন মিশ্র ভৌমিক, সহকারী শিক্ষক,গণিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বেগমগঞ্জ।
শ্রেষ্ঠ কর্মচারি নির্বাচিত হয়েছেন মোহাম্মদ মহিন উদ্দিন, কম্পিউটার অপারেটর,জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস, নোয়াখালী। শ্রেষ্ঠ উপজেলা শিক্ষা অফিসার হলেন সিদ্দিকুর রহমান খান। তিনি উপজেলা শিক্ষা অফিসার,সদর,নোয়াখালী। শ্রেষ্ঠ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্বাচিত হয়েছে সেনবাগ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সেনবাগ।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ তারিখে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মনছুর আলী চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশের মাধ্যমে এ তথ্য জানান।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা পদক কমিটির সভাপতি হিসেবে নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ ও সদস্য-সচিব মনছুর আলী চৌধুরী ও অন্যান্য সদস্যদের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে এই বাছাই প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করা হয়।