কবিরহাট (নোয়াখালী) প্রতিনিধি, আজকের সময় :
জেলার কবিরহাটে পুলিশ ও সেনা বাহিনীর যৌথ অভিযানে জাল ডলার ও জাল টাকা সহ এক সাবেক ইউপি সদস্যকে আটক করা হয়েছে।এসময় ১৩ বান্ডেল জাল ডলার এবং ১হাজার টাকার ২৫০টি জাল নোট উদ্ধার করে পুলিশ ও সেনাবাহিনী। গ্রেফতার ইউপি সদস্য (সাবেক) কবির উদ্দিন (৫১) সদর উপজেলার ৭নং ধর্মপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের ভাটিরটেক গ্রামের কবির মেম্বার বাড়ীর মৃত গোলাম মোস্তফার ছেলে।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে আসামীকে নোয়াখালী চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোফর্দ করা হয়। এর আগে সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে কবিরহাট উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের ৮নম্বর ওয়ার্ডের নবগ্রামের আতিক উল্যার বাড়ি থেকে রাত ১:৩০ মিনিটের সময় তাকে আটক করা হয়।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কবিরহাট থানার প্রেস ব্রিফিং সূত্রে জানা যায়, মামলার বাদী ফেনী জেলার দাগনভূইয়া উপজেলার ইয়াকুবপুর ইউনিয়নের বাদী মো. ইসমাইল হোসেন রুবেল (৩৫) তার বাবা মো. ইছহাক বাচ্চুর সাথে কবিরহাট উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের নবগ্রামের আব্দুর রবের ছেলে কথিত সাংবাদিক মোহাম্মদ আতিক উল্যাহ (৫০) এর সাথে দীঘ ৬ বছর যাবত পরিচয় রয়েছে।
অভিযুক্ত আতিক উল্যাহ গুপ্তধন পেয়েছে মর্মে তার বাবাকে জানায়। গুপ্তধন পেয়ে বিদেশে বিক্রয় করে কয়েক কোটি ইএস ডলার পেয়েছে। যা তার কাছে আছে। এই ভাবে ডলার দেওয়ার লোভ দেখিয়ে বাদীর পিতা থেকে বিগত ৪ বছরে বিভিন্ন সময়ে ৩৫ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। বাদী ও তার বাবা একাধিকবার টাকা ফেরৎ পাওয়ার জন্য অভিযুক্ত আসামী কথিত সাংবাদিক আতিক উল্যার বাড়ীতে যায়।
সেখানে প্রায় সময় আসামী কবির উদ্দিনকে দেখা যেত। আতিক উল্যার কার্যকলাপ সন্দেহ হলে ২০ দিন পূর্বে ঘটনার বিষয়ে নোয়াখালী সদর উপজেলা পরিষদের ভিতর অবস্থানরত আর্মি ক্যাম্পে গিয়ে অবহিত করেন।
অভিযুক্ত আতিক উল্যাহ গত ২৩ ডিসেম্বর বেলা ২টার সময় ফোন করে জানান যে, তার কাছে ইউএস ডলার রেডি আছে। ৭০ হাজার টাকা লাগবে। টাকা সাথে করে নিয়ে এসে পূর্বের পাওনা টাকা সহ ডলারগুলো নিয়ে যান। তার ফোনের কথার উপর ভিত্তি করে বাদী ও তার বাবা ঘটনার দিন (২৩ ডিসেম্বর) রাত অনুমানিক ৮টার সময় কবিরহাট উপজেলার নবগ্রামে (ঘটনাস্থল) আতিক উল্যার বসত ঘরে যায়।
সেখানে আতিক উল্যা তার ঘরে বসতে দিয়ে বাদীর সাথে থাকা নগদ ৭০হাজার টাকা নিয়ে নেয় এবং তাদেরকে কয়েকটি ইউএস ডলারের বান্ডেল দেখায়। সে গুলো থেকে ২ বান্ডেল (জাল) ডলার বাদীর হাতে দেয়। বাদী ডলার গুলো দেখে বুঝতে পারে ডলার গুলো জাল।
ভুক্তভোগীরা তখন আসামি আতিক উল্যার ঘর থেকে বের হয়ে গোপনে রাত অনুমানিক সোয়া ১০টার দিকে আর্মি ক্যাম্পের ক্যাপ্টেন আসাদকে ফোনে বিষয়টি অবহিত করলে রাত সাড়ে ১২টার দিকে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যদের যৌথ অভিযানে আতিক উল্যার বাড়ী ঘেরাও করে ঘরের ভিতর প্রবেশ করে।
পুলিশ ও সেনাবাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে আতিক উল্যাহ পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় ইউপি সদস্য ইলিয়াস মেম্বার ও প্রতিবেশীদের উপস্থিতিতে সেনা বাহিনী ও পুলিশ আতিক উল্যার ঘর তল্লাশী করে ড্রয়িং রুমের ওয়াড্রপের ড্রয়ারের ভিতর থেকে (ব্যাগের মধ্য থাকা) ১৩ বান্ডেল জাল ডলার এবং ১হাজার টাকার ২৫০টি জাল নোট উদ্ধার করে।
কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহিন মিয়া বলেন, বাদীর অভিযোগের আলোকে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানে জাল ডলার ও জাল টাকা উদ্ধার করা হয়। এসময় ও পুলিশ ও সেনাবাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে অভিযুক্ত আসামী কথিত সাংবাদিক আতিক উল্যাহ পালিয়ে যায়। পলাতক আসামী আতিক উল্যাহকে অপরাধমূলক কর্মকান্ডে এবং পলায়নে সহায়তা করার অপরাধে আসামী কবির উদ্দিন গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে মামলার আলোকে আটক আসামী কবির উদ্দিন কে আদালতে প্রেরণ করা হয়।