Home » সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারের অভিযোগ অসত্য : ওসি নিজাম

সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারের অভিযোগ অসত্য : ওসি নিজাম

by আজকের সময়

ফেনী প্রতিনিধি :

স্ত্রী হত্যা মামলায় গ্রেফতার সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তার ফেনী কারাগারে তার কক্ষ তল্লাশির অভিযোগ তুলে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে আদালতের কাছে আবেদন করেছেন। এমন অভিযোগকে অসত্য ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজাম উদ্দিন।

চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ ড. জেবুননেছা বেগমের আদালতে সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) বাবুল আক্তারের পক্ষে এ আবেদন করেন তার আইনজীবী গোলাম মাওলা মুরাদ। আদালত আবেদনটি নথিতে রেখে ১৯ সেপ্টেম্বর শুনানির জন্য সময় নির্ধারণ করেছেন।

মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টম্বর)ওসির কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেদিন শনিবার তিনি অন্য একটি মামলায় তদন্তের কাজে ওই কারাগারের জেল সুপারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। তিনি বাবুল আক্তারের কক্ষে যাননি।

ওসি বলেন, ‘উনি (বাবুল আক্তার) যে এই কারাগারে রয়েছেন, সেটা আমার স্মরণেও ছিল না। উনার কক্ষে আদালতের অনুমতি ছাড়া যাওয়ার ক্ষমতা কী আমার আছে? এসব কথা কারা কেন বলে বুঝতে পারছি না, ওনার কক্ষে প্রবেশ করারতো প্রশ্নই আসে না, ওনার সঙ্গে ফেনীর কোনো বিষয়ের সম্পৃক্ততাই নেই। ’

বাবুল আক্তারের আইনজীবী গোলাম মাওলা মুরাদ গণমাধ্যমকে বলেন,‘বাবুল আক্তার বৃহস্পতিবার স্বীকারোক্তি আদায়ে হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ তুলে পিবিআই প্রধানসহ ছয় পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন করেন। সেই মামলার আসামিদের নির্দেশে ও প্ররোচনায় গত ১০ সেপ্টেম্বর দুপুরে ফেনী মডেল থানার ওসি নিজাম উদ্দিন ফেনী কারাগারে প্রবেশ করে বাবুল আক্তারের কক্ষে দীর্ঘ সময় ধরে তল্লাশি চালান। গতকালের আবেদনে সেই অভিযোগ করা হয়েছে। ”

বাবুলের করা আবেদনে বলা হয় ‘জেল কোড অনুসরণ না করেই, বন্দীর কক্ষ তল্লাশির নামে জীবনের ক্ষতি সাধনের চেষ্টায় এ যাত্রায় সফল না হলেও আসামিরা যে কোনো সময় বাদী ও তার পরিবারের জীবননাশসহ যে কোনো ধরনের ক্ষতি করতে পারেন। ’

জেল কোড অনুসারে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও আদালতের লিখিত অনুমতি ছাড়া থানার পুলিশ কর্মকর্তা কোনোভাবেই জেলখানায় প্রবেশ করতে পারেন না বলে মন্তব্য করেন আইনজীবী গোলাম মাওলা মুরাদ।

অভিযোগে বলা হয়, ‘আইন-আদালতের তোয়াক্কা না করে আসামিদের নির্দেশে বাবুল আক্তারের জীবনের ক্ষতি সাধন ও মানসিকভাবে দুর্বল করার জন্য (ওসি) এভাবে কারাগারে প্রবেশ করেন। ’

ওই ঘটনার ‘তদন্ত এবং বাবুল আক্তারের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত’ করার জন্য ফেনী কারাগারের সুপারকে নির্দেশ দেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছে আবেদনে। নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইন ২০১৩ এর ১১ ধারায় বাবুল আক্তারের জীবনের ‘ক্ষতি করা ও ভয় দেখানোর’ অভিযোগ আনা হয়েছে সেখানে।

‘স্বীকারোক্তি আদায়ে’ হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ তুলে পিবিআই প্রধানসহ ছয় পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গত বৃহস্পতিবার আদালতে মামলার আবেদন করেন স্ত্রী হত্যার ঘটনায় বাদী থেকে আসামি হওয়া সাবেক এসপি বাবুল আক্তার।

ওই অভিযোগ মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হবে কিনা, আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর সে বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ ড. জেবুন্নেছা বেগম। সেদিন বাবুলের নতুন আবেদনের ওপরও শুনানি হবে।

ওই মামলার আবেদনে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) বর্তমান প্রধান বনজ কুমার মজুমদার, পিবিআইর চট্টগ্রাম জেলার এসপি নাজমুল হাসান, চট্টগ্রাম মহানগরের এসপি নাঈমা সুলতানা, পিবিআইর তৎকালীন পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা, পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার সাবেক পরিদর্শক এ কে এম মহিউদ্দিন সেলিম ও পিবিআই পরিদর্শক কাজী এনায়েত কবিরকে বিবাদী করা হয়েছে।

বাবুলকে ২০২১ সালের ১০ থেকে ১৭ মে পর্যন্ত ‘আটকে রেখে স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্য হ্যান্ডকাফ পরিয়ে, ঘুমাতে না দিয়ে, গোসল করতে না দিয়ে অজু করার পানি না দিয়ে নির্যাতন’ করার অভিযোগ আনা হয়েছে মামলার আর্জিতে।

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতুকে প্রকাশ্যে গুলি চালিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

আরো খবর