শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্টের কমিটি অন পাবলিক এন্টারপ্রাইজের (সিওপিই) উন্মুক্ত শুনানিতে ফার্নান্দো এ অভিযোগ তোলেন। শুনানির একটি ভিডিও ফুটেজ টুইটারে প্রকাশিত হয়। বিভিন্ন সংবাদপত্রের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ফার্নান্দো পার্লামেন্টের সিওপিইর শুনানিতে বলেন, ‘রাজাপক্ষে আমাকে বলেছেন, মোদির কাছ থেকে চাপে আছেন তিনি।’
এক দিন পর প্রেসিডেন্ট রাজাপক্ষে নিজে টুইটারে এমন অভিযোগ অস্বীকার করেন। এরপর গতকাল রোববার ফার্নান্দো ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে অন্য কথা বলেন। তিনি এবার দাবি করেন, তাঁকে এমন কিছু প্রশ্ন করা হচ্ছিল যেগুলো তাঁকে দোষী প্রমাণিত করে। এতে ‘আবেগে কাবু হয়ে’ তিনি প্রকল্পটি নিয়ে মোদির চাপের কথা এভাবে বলেছেন।
প্রেসিডেন্ট রাজাপক্ষে টুইট করেন, ‘মান্নারে একটি বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্প দেওয়া নিয়ে সিওপিই কমিটির শুনানিতে সিইবির চেয়ারম্যানের দেওয়া একটি বিবৃতি সম্পর্কে স্পষ্ট করে বলছি, কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে এই প্রকল্প দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করছি। আমি বিশ্বাস করি, এই বিষয়ে দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা যোগাযোগ করবেন।’
প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকেও এ নিয়ে একটি লম্বা বিবৃতি দেওয়া হয়। তাতে ওই প্রকল্প ঘিরে যেকোনো ব্যক্তির প্রভাব বিস্তারের বিষয়টি পুরোপুরি অস্বীকার করা হয়। তাতে আরও বলা হয়, প্রেসিডেন্ট স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, তিনি মান্নারের ওই বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্পটি কোনো ব্যক্তি বা সংস্থাকে দেওয়ার বিষয়ে অনুমোদন দেননি।’
এক দিন পর ফার্নান্দোকে উদ্ধৃত করে শ্রীলঙ্কার দৈনিক দ্য মর্নিংয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়ে, ফার্নান্দো এ ব্যাপারে ক্ষমা চেয়েছেন এবং তিনি বলেন, অনাকাঙ্ক্ষিত চাপ আর আবেগের বশবর্তী হয়ে তিনি এমন কাজ করেছিলেন।
এর এক দিন পর শ্রীলঙ্কা সরকার আইন পরিবর্তন করে বিদ্যুৎ প্রকল্পটির কাজ দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতামূলক দরপত্রের বাধ্যবাধকতা তুলে নিলে বিতর্ক নতুন মাত্রা পায়। বিরোধী দলগুলো সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলে ভারতের আদানি গ্রুপকে ওই বিদ্যুৎ প্রকল্পটি দেওয়ার জন্য সরকার আইন পরিবর্তন করেছে।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত বছরের অক্টোবরে শ্রীলঙ্কা সফরে যান আদানি গ্রুপের কর্ণধার গৌতম আদানি। প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের সঙ্গে বৈঠক নিয়ে তিনি টুইটও করেন। বন্দর প্রকল্প ছাড়াও অংশীদারত্বের ভিত্তিতে শ্রীলঙ্কার অন্যান্য অবকাঠামো প্রকল্পগুলোর দিকে মুখিয়ে আছেন বলেও জানান তিনি।
(আজকের সময়/আইআই/জুন ১৩, ২০২২)