Home » বিশ্ব শিক্ষক দিবস

বিশ্ব শিক্ষক দিবস

by ajkersomoy

আবদুল্লাহ নয়ন, আজকের সময় :

আজ বিশ্ব শিক্ষক দিবস। ১৯৯৪ সাল থেকে প্রতিবছর ৫ অক্টোবর দিবসটি পালিত হয়। এই দিন বিশ্বের সব শিক্ষকের অবদানকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করা হয়। আদর্শ সমাজ গঠনে শিক্ষকদের ভূমিকা অপরিসীম। আমি মাহান আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি তিনি আমাদেরকে সুস্থ ও সুন্দর ভাবে এখানে আসার ও বসার সুযোগ করে দেওয়ায়।

আজ আমি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি মানবতার মহান শিক্ষক,পৃথীবিকে সভ্যতার আলো পৌঁছিয়ে দেওয়ার মুক্তির দূত প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ)কে। স্মরণ করছি আমার শৈশবের শিক্ষক আমার প্রথম শিক্ষক আমার বাবা-মা সহ প্রাথমিক থেকে উচ্চ শিক্ষা পর্যন্ত যাদের হাতে আমার শিক্ষা জীবন গঠিত হয়েছে ও যাদের থেকে আমি একটি শব্দ ও শিখেছি সেই সকল মহান শিক্ষকদেরকে। তাদের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করি। আর যারা ইন্তেকাল করেছেন তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর দেশে দেশে যখন নতুন ভাবনা নিয়ে পুনর্গঠনের কাজ শুরু হয়, তখন ১৯৪৭ সালে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংস্থার (ইউনেস্কো) এক সভায় বিশ্বের শিক্ষকদের জন্য একটি ‘সনদ’ প্রণয়নের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়। ১৯৪৮ সালে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা ঘোষণা করে, ‘শিক্ষা লাভ মানুষের মৌলিক অধিকার এবং ব্যক্তিত্ব বিকাশের হাতিয়ার।’ এরই ফলে ১৯৫২ সালে বিশ্ব শিক্ষক সংঘ (ডাব্লিউটিপি) গঠিত হয়। এরপর আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) উদ্যোগে অনুষ্ঠিত বিশেষজ্ঞদের এক সভায় শিক্ষকদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক সমস্যা এবং তা সমাধানের জন্য কিছু প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় ১৯৬৬ সালের ৫ অক্টোবর ইউনেস্কোর এক সভায় শিক্ষকতা পেশার জন্য কী দায়িত্ব ও কর্তব্য এবং কী অধিকার ও মর্যাদা, তা নিয়ে ১৪৬ ধারা-উপধারাবিশিষ্ট একটি সুপারিশমালা প্রণয়ন করা হয়। এই ইউনেস্কো/আইএলও’র সুপারিশকেই ‘শিক্ষক সনদ’ বলা হয়। বিশ্বের ১৭২টি দেশের ২১০টি শিক্ষক সংগঠনের প্রতিনিধিত্বশীল সংস্থা এডুকেশন ইন্টারন্যাশনালের (EI) ক্রমাগত অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯৪ সালে অনুষ্ঠিত ইউনেস্কোর ২৬তম অধিবেশনে গৃহীত সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে ইউনেস্কোর তৎকালীন মহাপরিচালক ড. ফ্রেডারিক মেয়রের যুগান্তকারী ঘোষণার ফলে ওই বছর থেকে প্রতি বছর ৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালিত হয়। এর লক্ষ্য শিক্ষক সনদ বাস্তবায়ন করা। ১৯৯৫ সালে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও প্রথমবারের মতো সরকারি উদ্যোগে বিশ্ব শিক্ষক দিবস উদযাপিত হয়।

ইউনেস্কো গতিশীল মনের অধিকারী কর্তব্যনিষ্ঠ ও নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক সমাজের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ২০২৫ সালে ৩১তম বিশ্ব শিক্ষক দিবসের মূল বিষয় হিসেবে ‘Reacasting Teaching as a Collaborative Profession বা শিক্ষকতা পেশা: মিলিত প্রচেষ্টার দীপ্তি’ নির্ধারণ করেছে। এই দিবসটি উদ্‌যাপনকালে সারা বিশ্বের শিক্ষকদের মতো আমাদের দেশের শিক্ষকদেরও অতীতের সব অর্জন ও ব্যর্থতার সমীক্ষা করতে হবে এবং সেই সঙ্গে বিশ্বমানের শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়ার অঙ্গীকার নিয়ে সম্মিলিতভাবে সচেষ্ট হতে হবে।
শিক্ষককে ‘মানুষ গড়ার কারিগর’ এবং ‘আলোর দিশারি’ হিসেবে দেখা হয়। শিক্ষকতা সৃষ্টিকর্তার দেয়া মহান দায়িত্ব। আমি গর্বিত পৃথিবীর সকল পেশার মধ্যে সেরা পেশার একজন হতে পেরে। আমি আরো গর্ব বোধ করি এই জন্য যে, আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) একজন শিক্ষক ছিলেন। তিনি নিজেই এ পরিচয় তুলে ধরে ঘোষণা করেছেন- বুয়েছতু মুয়াল্লেমুন ‘শিক্ষক হিসেবে আমি প্রেরিত হয়েছি (ইবনু মাজাহ :২২৫)।’
শিক্ষকদের কল্যাণার্থে তাঁর অন্যতম একটি দোয়া ছিল – “ হে আল্লাহ! সকল শিক্ষককে ক্ষমা করো। তাঁদের দীর্ঘজীবী নেক হায়াত দান করো।’’ পবিত্র ইসলাম ধর্মও শিক্ষকদের উচ্চ আসনে আসীন করেছে। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত রাসূল (সাঃ) এরশাদ করেন- “ তোমরা জ্ঞান অর্জন কর এবং জ্ঞান অর্জনের জন্য আদব-শিষ্টাচার শিখো। তাকে সম্মান কর যার থেকে তোমরা জ্ঞান অর্জন কর। (আল-মুজামুল আউসাত :৬১৮৪)
পবিত্র কুরআন মাজীদের প্রথম নাজিলকৃত আয়াত হচ্ছে- (خَلَقَ الَّذِي رَبِّكَ بِاسْمِ اقْرَأْ), “পড়ো তোমার রবের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন”। যা জ্ঞানার্জনের প্রতি ইসলামের অটুট আহ্বানের প্রতীক। পবিত্র কুরআনের সূরা আর-রহমানের দ্বিতীয় আয়াত, যা আল্লাহ তা’আলা বলেন- (ٱلْقُرْءَانَ عَلَّمَ) (যার অর্থ “তিনি শিক্ষা দিয়েছেন কুরআন”। তিনি মানুষ ও জ্বিনকে কুরআন শিক্ষা দিয়েছেন। يَعْلَمُونَ لَا وَالَّذِينَ يَعْلَمُونَ الَّذِينَ يَسْتَوِي هَلْ قُلْ
যুমার-আয়াত- ০৯, বল- যারা জানে আর যারা জানে না, তারা কি সমান হতে পারে? (يُوحَىٰ إِ وَحْيٌ لَّا هُوَ إِنْ الْهَوَىٰ ۚعَنِ يَنطِقُ وَمَا সুরা নজম । অর্থাৎঃ ( রাসুল সাঃ ) নিজ প্রবৃত্তি হতে কিছুই বলেন না বরং তিনি যা বলেন তা আল্লাহর পক্ষ হতে ওহী বটে । জ্ঞানীর কলমের কালী শহীদের রক্তের চেয়ে উত্তম। একজন আবেদের ইবাদত অপেক্ষা একজন জ্ঞানীর ঘুম উত্তম। বিদায় হজের ভাষণে রাসুল (সঃ) বলেন- رَسُولِهِ وَسُنَّةَ اللَّهِ كِتَابَ بِهِمَا تَمَسَّكْتُمْ مَا تَضِلُّوا لَنْ أَمْرَيْنِ فِيكُمْ تَرَكْتُ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি তোমাদের মধ্যে দু’টি জিনিস রেখে যাচ্ছি। যতক্ষণ তোমরা সে দু’টি জিনিস আঁকড়ে ধরে থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত পথভ্রষ্ট হবে না- আল্লাহর কিতাব ও তাঁর রসূলের হাদীস।

শিক্ষক নামটি বেশ ওজনদার। second mother খ্যাত শিক্ষক, প্রাণিত্বকে মনুষ্যত্বে কনভার্ট করার মহান দায়িত্বে ব্রত। শিক্ষকের কাজ সম্পর্কে বলতে গেলে Burtrand Russell –এর কথাটি না বললেই নয়। তিনি বলেন- শিক্ষকের কাজ দুটি। (১) শিক্ষার্থীদের পাঠের প্রতি আগ্রহী করে তোলা। (২) সেই আগ্রহকে নিবৃত করা । কিতাবে- কলমে কাজ দুটোকে সহজ মনে হলেও প্রাক্টিকালি কাজ দুটো খুবই কঠিন। যারা এ দুটো কাজ সুচারুরূপে করতে পারেন তারাই শিক্ষক। তাদের পদতলে শিক্ষার্থীরা মাথা ঝুঁকাতে বাধ্য। শিক্ষকদের ও মনে রাখা উচিৎ , “ সবাই যদি পারদকে স্বর্ণ করতে জানে তাহলে স্বর্ণের দামটা থাকবে কোথায় ?” অর্থাৎ প্রকৃত শিক্ষক হয়ে উঠা বহু সাধনার বিষয়।

অসম্ভব সুন্দর যাদু দেখায় জুয়েলাইট । হাতের যাদুর কাঠি হয়ে উঠে ফু

আরো খবর