দাগনভূঞা প্রতিনিধি :
ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার উত্তর আলীপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের অফিস সহকারী তানভির হোসেনের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলা, অসদাচরণ ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ উঠেছে। এর আগে দাগনভূঞার একটি স্কুল থেকে খন্ডকালীন শিক্ষকের দায়িত্বে থাকাকালীন ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে বহিস্কার হন।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ২২ অক্টোবর বিকেল ৩টা ২০ মিনিটে দ্বাদশ শ্রেণির ৩৪ জন শিক্ষার্থীর রেজিস্ট্রেশনের তথ্য কম্পোজের দায়িত্ব দেওয়া হয় অফিস সহকারি তানভির হোসেনকে। কিন্তু পরদিন (২৩ অক্টোবর) দুপুর ১২টা পর্যন্ত কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় কারণ জানতে চাইলে তিনি অধ্যক্ষের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন। দায়িত্ব পালন না করে অফিস সময়ে বহিরাগতদের এনে বিদ্যালয় ভিডিও ধারন করে শিক্ষকদের হুমকি দিতে থাকেন। শিক্ষকদের ক্লাসের আগেপরে অবান্তর প্রশ্ন করে বিব্রত করার চেষ্টা করেন।
লিখিত অভিযোগে যানা যায়, অফিস সহকারি তানভীর নিজের ইচ্ছেমতো অফিসে আসা-যাওয়া করেন, অফিস অধ্যক্ষ বা শিক্ষকদের কোন আদেশ অনুরোধ মানতে নারাজ। বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায়কৃত টাকা নিয়ে রশিদে গড়মিল দেখা গেছে।
অভিভাবকরা জানান, তানভীর অফিস সহকারি হয়ে ক্লাস রুমে গিয়ে ছাত্রছাত্রীদের নিজের কাছে প্রাইভেট পড়তে বাধ্য করেন, অন্য শিক্ষকদের পড়া ভালো নয় বলে অঙ্গভঙ্গি করে বিদ্রুপমূলক আচরণ করেন।
স্কুল শিক্ষকরা জানান, মৌখিকভাবে একাধিকবার সতর্ক করা হলেও তানভির হোসেন তার আচরণ সংশোধন করেননি। আবদুর রহিম নামে একজন সচেতন অভিভাবক জানান, দক্ষিণ নেয়াজপুর মকবুল আহাম্মদ উচ্চ বিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে কর্মরত অবস্থায় ছাত্রীকে যৌনহয়রানি ও কেলেঙ্কারির ঘটনায় তানভির হোসেনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল এবং তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাকে দাগনভূঞা উপজেলার কোনো প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ না দেওয়ার পরামর্শ দেন।
অভিযুক্ত অফিস সহকারি তানভীর হোসেন সকল অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, আমি মাস্টার্স পাশ করলেও সম্মানের সাথে চাকরি করতে পারছি না। শিক্ষকরা আমাকে চোখ রাঙিয়ে কথা বলেন। আমি স্বাধীনভাবে কাজ করতে চাই।
অধ্যক্ষ জহিরুর আলম জানান, প্রতিষ্ঠানের কোন অনিয়ম দুর্নীতি হলে পরিচালনা কমিটি এবং প্রশাসন ব্যবস্থা নিবেন। কিন্তু দাপ্তরিক দায়িত্ব পালন না করে উল্টো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করায় শিক্ষক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে, যা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। অভিভাবক-ছাত্রছাত্রীদের মাঝে বিদ্রুপ ও অস্বস্তিকর মনোভাব সৃষ্টি হচ্ছে।
দাগনভূঞা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি জানান, বিষয়টি জেনেছি। অনিয়ম ও বিশৃঙ্খল করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।