Home » ফেনীতে বন্যায় দুই হাজার উদ্যোক্তা খামারি ক্ষতিগ্রস্থ, ২’শ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি

ফেনীতে বন্যায় দুই হাজার উদ্যোক্তা খামারি ক্ষতিগ্রস্থ, ২’শ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি

by আজকের সময়
এম শরীফ ভূঞা, ফেনী : 
জেলায় স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় সরকারি হিসেবে এতে ক্ষতি হয়েছে ১৮৮ কোটি ৪৫ লাখ ৫৫ হাজার ২১০ টাকার। তবে বেসরকারি সূত্র বলছে, এর পরিমাণ প্রায় ২শ কোটি ছাড়িয়ে যাবে। ৫৯ লাখের বেশি হাঁস-মুরগি মারা গেছে। এতে খামারিসহ গৃহস্থদের মাথায় হাত পড়ছে।
জেলা প্রশাসন ও প্রাণি সম্পদ অফিস সূত্র জানায়, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফেনীর দুই সহস্রাধিক খামারি। শেষ সম্বল হারিয়ে তারা এখন নি:স্ব। জেলার বিভিন্ন স্থানে খামার ও গৃহস্থের ১ লাখ ৬৭ হাজার ২৭৭টি হাঁস মারা গেছে। ৫৭ লাখ ২১ হাজার ৩শ ১টি মুরগি মারা গেছে। এছাড়া জেলায় ৩০ হাজার ৬৫০টি গরু, ১১ হাজার ৪৮৭টি ছাগল, ২ হাজার ১৬৪টি ভেড়া ও ১৯৪টি মহিষ মারা গেছে। এতে শুধুমাত্র গরুর মূল্যাই সবচেয়ে বেশি। যার পরিমাণ ১৮৮ কোটি টাকার বেশি।
ফেনী সদর উপজেলার মোটবী ইউনিয়নের বাঘাইয়া গ্রামের বাসিন্দা ফখরুল ইসলাম জানান, ধারদেনা, ব্যাংক ঋণ ও নিজের সঞ্চয় দিয়ে তিলে তিলে ব্যবসা গড়ে তোলেন। বন্যায় তার খামারের ৪০ হাজার সোনালি মুরগি, ১০ হাজার লেয়ার মুরগি মারা যায়। ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে সবগুলো খামার। দুই গুদামে থাকা ১৫ লাখ টাকার মুরগির খাদ্য পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায়।
দাগনভূঞা মধ্যম কেরোনীয়া গ্রামের উদ্যোক্তা শফিক আহমেদ বিপ্লব জানান, বন্যায় বিশ হাজার মুরগীর মধ্যে ১৫ হাজার মুরগী দ্রুত বিক্রি বিভিন্ন  স্থানে স্থানান্তর করি। এতে আনুমানিক ২০ লাখ টাকার অবকাঠামো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ১০/১২ জন নিয়মিত শ্রমিক বেকার বসে আছে। কিভাবে শুরু করবো জানি না।
ফুলগাজী উপজেলার মুন্সিরহাট ইউনিয়নের মোহাম্মদ শিমুল জানান, এই পোল্ট্রি খামারে কখনও বন্যার পানি উঠেনি। কিন্তু এবারের বন্যায় খামারে ঘরের চাল পর্যন্ত পানি উঠায় ২ হাজার মুরগি বাঁচাতে পারলেও অনেক চেষ্টা করে বাকি ১১ হাজার মুরগি বাঁচাতে পারিনি।
সদর উপজেলার কাজিরবাগ ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামের এসএস পোল্ট্রি এন্ড ডেইরী ফার্মের মালিক মো: রফিকুল ইসলাম শাহীন বলেন, লাভের আশায় খামারে আরও ২ হাজার বয়লার মুরগির বাচ্চা এনেছিলাম। বন্যার পানি দ্রুত বাড়তে থাকলে মুরগি মারা যাবে ভেবে মুরগিগুলোর বের হওয়ার জন্য খামারের কয়েকটি জায়গার মুখ খুলে দিয়েছিলাম। একপর্যায়ে মুরগি গুলো বন্যার পানিতে ডুবে মারা যায়।
জেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো: মোজাম্মেল হক বলেন, বন্যায় প্রাণীসম্পদ বিভাগের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি তালিকা অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। সরকারিভাবে কোন ধরনের সহযোগিতা আসেনি।

আরো খবর