কোম্পানীগঞ্জ প্রতিনিধি :
নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়ন ও ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার চরদরবেশ ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ মুছাপুর ক্লোজার (সুইজগেইট) পুনঃনির্মান, নদী ভাঙ্গন রোধ ও ছোট ফেনী নদী সেতু সংস্কারের দাবীতে মানববন্ধন পালন করে।
রোববার (১ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০ ঘটিকায় স্থানীয় বাংলা বাজারের জিরো পয়েন্টে মুছাপুর সচেতন নাগরিক ফোরামের ব্যানারে এই মানব বন্ধন পালন করে। কোম্পানীগঞ্জ ও সোনাগাজী উপজেলার হাজার হাজার মানুষ এসে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ গ্রহণ করে।
মানববন্ধনে বক্তারা অতিদ্রুত মুছাপুর জনতা বাজারের নদী ভাঙ্গন রোধে কার্যক্রম ভুমিকা নেওয়ার জন্য দাবী জানান। তারা বলেন মুছাপুর ক্লোজার এই এলাকার স্বপ্ন ছিল, মুছাপুর ক্লোজারের কারণে মুছাপুর ইউনিয়নটি সারা নোয়াখালী তথা পুরো দেশে পরিচিতি ছিল। হাজার হাজার মানুষ এখানে পর্যটক হিসেবে ঘুরতে আসতো ফলে এখানকার ব্যাবসা, বানিজ্য সহ মানুষের জীবন যাত্রার মান বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু আজকে সেই স্বপ্নের মুছাপুর ক্লোজার ধ্বংসে হয়ে যাওয়াতে ৭৪ কোটি টাকা ব্যায়ে ২০১৮ সালে নির্মিত কোম্পানীগঞ্জ ও সোনাগাজী উপজেলার একমাত্র সংযোগ সেতু ও ধসে পড়ছে। সেতুর পশ্চিম পাশে বিশাল গর্ত তৈরি যওয়াতে সকল যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। মুছাপুরে জনতা বাজারে নদী ভাঙ্গন প্রকট আকার ধারন করেছে।
বক্তারা বলেন ভারতের পানি আগ্রাসন, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নির্মাণ ত্রুটি ও স্থানীয় বালু খেকোদের কারণে ক্লোজার ভেঙ্গে গেছে। তারা অতি দ্রুত এর সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জোর দাবী জানান।
থানারহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মুহাম্মদ আবদুল্যাহ নয়ন বলেন ২০০৫ সালে বিএনপির প্রায়ত মন্ত্রী মওদুদ আহমদের উদ্যোগে ততকালীন পানি সম্পদ মন্ত্রী এল,কে ছিদ্দিকে মুছাপুর ক্লোজার নির্মাণের প্রস্তাব করেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া স্বশরিরে এসে এই মুছাপুর ক্লোজারের নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেন। মুছাপুর ক্লোজার নির্মাণ হওয়ার কারণে এলাকায় মানুষ তাদের জীবনের জমানো আয় দিয়ে ঘরবাড়ি নির্মাণ করেছে। বিভিন্নি ব্যবসায়িক বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেয়েছে। মানুষের কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পেয়েছে। এখানে অর্থনৈতিক জোন,নদী বন্দর হওয়ার ও সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু স্বপ্নের মুছাপুর ক্লোজার ভাঙ্গনের কারণে তাদের সেই ঘরবাড়ি আজ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। তাদের সেই স্বপ্ন চুরি হয়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যে প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার ঘরবাড়ি হারিয়ে বাস্তুহারা হয়ে পড়েছে। হাজার হাজার একর ফসলী জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছে। তিনি বলেন ২৬ আগস্ট মুছাপুর ক্লোজার ভেঙে যাওয়ার পর থেকে নদী ভাঙ্গন রোধে এখন পর্যন্ত প্রশাসন দৃশ্য মান কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। তাই অতি দ্রুত মুছাপুরে নদী ভাঙ্গন রোধে দীর্ঘ মেয়াদী রেগুলেটর নির্মাণ ও ছোট ফেনী নদী সেতু সংস্কার করার জন্য সরকারের প্রতি আহব্বন জানানো হয়।
বাংলা বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সাইফুল্লাহ আদনানের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন বৈষম্য বিরোধি ছাত্র আন্দোলন ধনিয়া কলেজ শাখার সমন্বয়ক ইউসুফ পিয়াস, বৈষম্য বিরোধি ছাত্র আন্দোলন মুছাপুরের সমন্বয়ক ওয়াসিম, আলেমদের প্রতিনিধি মুফতি রবিউল ইসলাম, কলেজ শিক্ষক প্রতিনিধি মোফাজ্জল হোসেন সোহাগ, মাধ্যমিক শিক্ষক প্রতিনিধি সফিউল্যাহ কাজল, প্রাথমিক শিক্ষক প্রতিনিধি মুহাম্মদ আবদুল্যাহ নয়ন, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি আকবর হোসেন আশেক, রাজনৈতিক প্রতিনিধি দেলোয়ার হোসেন মুন্না, সেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন উই ফর ইউ প্রতিনিধি আমান উল্লাহ তানভীর, সেচ্ছাসেবী সংগঠন জীবন আলো প্রতিনিধি আশ্রাফুল ইসলাম রাপি, সচেতন নাগরিক ফোরাম প্রতিনিধি রাকিব নুর, সোহেল, শিক্ষার্থী মাহবুবুর রহমান হিমেল, হৃদয় আবু, সাখাওয়াত রিপন সহ ছাত্র জনতা মানববন্ধনে অংশ নেন।