আজকের সময়, ফেনী :
ফেনীতে জমে উঠছে কোরবানির পশুর হাট। এবার হাটগুলোতে বড় গরুর সরবরাহ থাকলেও ক্রেতাদের চোখ আটকে যাচ্ছে ছোট ও মাঝারিগুলোর দিকে। জেলার ৬ উপজেলা ও ৫ পৌরসভায় স্থায়ী-অস্থায়ী মিলে ১২৮টি পশুর হাট বসেছে এবার। এদিকে, হাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের নিরাপত্তায় নানা পদক্ষেপ নিয়েছে প্রশাসন।
এদিকে, হাটগুলোর মধ্যে স্থায়ী ১৫টি এবং অস্থায়ী ১১৩টি হাটে ক্রেতা-বিক্রেতার উপস্থিতিতে বাজার সরগরম হয়ে উঠেছে। খামারগুলো গরুতে ভরা। বেচাকেনাও কমবেশি চলছে।
ফেনীর সবচেয়ে বড় কয়েকটি হাটের মধ্যে বকতারমুন্সি পশুর হাট একটি। এ হাটে ফেনীর বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ব্যাপারীরা গরু বিক্রির জন্য নিয়ে আসেন। কোরবানির ঈদের ৮ থেকে ১০ দিন আগে গরু, ছাগলসহ বিভিন্ন পশু কেনাবেচায় সরগরম হয়ে উঠে এই হাট।
জেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগের তথ্য বলছে, এবার কোরবানির ঈদে ফেনীতে চাহিদা রয়েছে ৯০ হাজার পশুর। এর বিপরীতে জেলার বিভিন্ন খামারি ও প্রান্তিক পশু পালনকারীদের কাছে ১ লাখের বেশি পশুর যোগান আছে। এ ছাড়াও অনেকে নিজেরা লালন পালন করে কোরবানি করে থাকেন। সে হিসাবে ১ লাখ ২ হাজার পশু প্রস্তুত রয়েছে।
পশু বিক্রেতা মোমিন বলেন, গ্রামে হাট বসাতে বাড়িতে পালন করা একটি ছাগল নিয়ে এসেছি। লোকজন দেখছে কিন্ত দাম একেবারেই কম বলছে। ১৭ থেকে ১৮ কেজির ছাগলের দাম বলছে ১২ হাজার, ১৪ হাজার। কিন্ত ১৫ হাজার দাম হলে বিক্রি করে দেবো।
এই পশুর হাটের আধিপত্য রয়েছে দেশি গরুর। তবে বড় গরুর চেয়ে ছোট এবং মাঝারি আকারের গরুর কাছেই ক্রেতাদের ভিড় বেশি।
হাটে আগত ক্রেতা নজরুল ইসলাম সোহাগ বলেন, হাটে প্রচুর পরিমাণে গরু ও ছাগল উঠেছে। তুলনামূলকভাবে ছাগলের দাম অন্যান্য বছরের মতো। অন্যদিকে, গরুর দাম একটু বেশি মনে হচ্ছে।
ফেনী জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আনিসুর রহমান জানান, খাবার ও রক্ষণাবেক্ষণের ব্যয় বাড়তি থাকায় বাজারে পশুর দর কিছুটা চড়া থাকবে। তবে সেটি অতিরিক্ত না। এবার বাজারের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অনলাইন ও সরাসরি খামারেই পশু বিক্রি হচ্ছে।
ফেনীর পুলিশ সুপার জাকির হাসান বলেন, ফুলগাজী দিয়ে গরু চালান বেশি হয়। গরু পাচার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। কোরবানি ঈদকে কেন্দ্র করে কোনো গরু যাতে ভারত থেকে না আসে সে বিষয়ে পুলিশ, বিজিবি, র্যাবসহ সব আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী সতর্ক আছে। সড়ক ও মহাসড়কের পাশে কোনো গরুর হাট থাকবে না। সে বিষয়ে ইজারাদারদের আলোচনা হয়েছে। এসময় জাল টাকা প্রতিরোধ ও গরু ব্যবসায়ীদের হয়রানি বন্ধে পুলিশ সচেতন থাকবে।
ফেনী জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ-উল হাসান জানান, পশুর হাট ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিতে ব্যাংকিং সেবাকে বাজারভিত্তিক করার জন্য ব্যাংকগুলোর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। কোরবানির পশুরহাটে দালাল চক্র অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধি ঠেকাতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হবে।