Home » দাগনভূঞা সরিষার হলদে ফুলে ছেয়ে গেছে ফসলের মাঠ

দাগনভূঞা সরিষার হলদে ফুলে ছেয়ে গেছে ফসলের মাঠ

by আজকের সময়

দাগনভূূঞা প্রতিনিধি:

ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের সরিষা ফসলের মাঠে হলদে শাড়ি পরে লাখ লাখ নববধূ যেন বিচরণ করছে। সরিষার হলদে ফুলে ছেয়ে গেছে ফসলের মাঠের পর মাঠ। মাঠের দিকে তাকালে গ্রাম জুডে যেন হলুদ গালিচা বিছানো হয়েছে।
দাগনভূঞায় উপজেলার চলতি মৌসুমে উপজেলার সরিষা চাষা হয়েছে ২২৫ হেক্টর জমিতে। প্রচলিত দেশি সরিষার চেয়ে ফলন বেশি হওয়ার বারি সরিষা -১৪, ১৭ ও১৮ বিনা সরিষা ৪, ৯ ও ১১ জাতের সরিষা চাষে কৃষকরা আগ্রহী হচ্ছে। স্বল্প খরচ আর কম সময়ে উৎপাদন হওয়ায় সরিষা চাষে ঝুঁকছে দাগনভূঞার কৃষকরা। উন্নত জাতের সরিষা চাষ করে লাভবান হচ্ছে তারা। ফলে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর দ্বিগুন সরিষা চাষ। অনেকেই আমন দান সংগ্রহের পর জমি ফেলে না রেখে সরিষা চাষ শুরু করেছেন। এরপর আবার বোরো ধান রোপন করবেন তারা উন্নত জাতের বারি সরিষা -১৪, ১৭ ও১৮ বিনা সরিষা ৪, ৯ ও ১১ গাছের উচ্চতা হয় দেড় থেকে দুই ফুটের মত। আগে সরিষা গাছ বড় হলেও ফলন কম হতো। নতুন জাতের ছোট আকারের এর সরিষা গাছের গোড়া থেকে মাথা পর্যন্ত ফল আসছে। বীজ বপনের ৭০ দিনের মধ্যেই জমি থেকে সরিষা সংগ্রহ করা যায়। সরিষার বড় শক্র জাব পোকা। দাগনভূঞায় এখন পর্যন্ত জাব পোকা আক্রমন দেখা যাচ্ছে না বলে কৃষকরা জানান। এ দিকে চলতি বছরের দাগনভূঞায় সরিষার বাম্পার ফলন হবে বলে আসা করছে উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তারা।
সরিজমিনে পরিদর্শনে বিভিন্ন গ্রামের চাষিরা জানানম এবার প্রতি বিঘা জমি থেকে ৬-৭ মন সরিষা উৎপাদন আসা করছেন তারা। অনুকূল পরিবেশের কারণে এবার চলতি রবি মৌসুমে দাগনভূঞা লক্ষমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে।

দাগনভূঞা উপজেলার জায়লস্কর ইউনিয়নের দক্ষিণ নেয়াজপুর গ্রামের সরিষা চাষে আবুল খায়ের বলেন, ইরি-বোরো চাষে খরচ বেড়ে যাওয়ায় বোরো আবাদের আগে খরচ পোষাতেই সরিষা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন এখানকার কৃষকরা। নতুন জাতের বারি সরিষা -১ রোপনে উৎসাহিত করায় কৃষকরা ভালো ফলন পাচ্ছেন।

দাগনভূঞা উপজেলার মাতুভূঞা ইউনিয়নের লালপুর গ্রামের সরিষা চাষে নেজাম উদ্দিন জানান, প্রতিবিঘা জমিতে সরিষা চাষে খরচ হয় সর্বোচ্চ ৩ হাজার টাকা। প্রতিমণ সরিষা বিক্রি করা যায় ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকা দরে। প্রতি বিঘাতে গড়ে ৭ মণ সরিষা উৎপাদন হলে বিঘা প্রতি ১৫-১৬ হাজার টাকা লাভ করা যায়।

দাগনভূঞা উপ সহকারি কৃষি কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মারুফ বলেন, জমিতে সরিষার আবাদ করলে ওই জমিতে সরিষার পাতা পড়ে জৈব সার উৎপাদন হয় পরবর্তীতে ঐ জমিতে ফসলের ফলন ভালো উৎপাদন হবে। এতে একদিকে যেমন কৃষকরা লাভবান হবেন,জমির স্বাস্থ্য ভালো থাকবে অপরদিকে পুষ্টিকর ভোজ্য তেলের চাহিদা ও মিটবে। তাই সরিষা চাষ করতে কৃষকদের মাঝে প্রণোদনার কর্মসূচি আওতা বিনামূল্য সরিষার বীজ ও সার দিয়ে উৎসাহিত করা হয়েছে।চতুর্মুখী লাভে সরিষা চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে, আগামীতেও সরিষা আবাদ বাড়বে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: মহিউদ্দিন মজুমদার বলেন, কৃষকরা এবছর সরিষার বীজ বেশি চাষ করেছেন। এছাড়া তিনি উপজেলা বিভিন্ন গ্রামে ব্লাক বা ক্ষেত পরিদর্শনসহ ভালো ফলন পেতে চাষাবাদের জন্য কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছেন। তাছাড়া আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সরিষার ভালো ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে তিনি আশাবাদী।

 

MHS/Ajker Somoy

আরো খবর