আহসান এইচ মনসুর বলেন, বাজেট পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, এখানে তিনটি বড় চ্যালেঞ্জ আছে। একটা হলো রাজস্ব-সংকট। কিন্তু এই সংকট কাটাতে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা প্রস্তাবিত বাজেটে নেই। রাজস্ব ঘাটতির কারণে প্রতিবছর শেষ পর্যন্ত বাজেটে বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয় করতে পারে না সরকার। কিন্তু এই সমস্যা মোকাবিলায় মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি যেসব পরিকল্পনা রাজস্ব বোর্ডের নেওয়া উচিত, সে রকম কিছু বাজেটে নেই।
পাশাপাশি বাজেট ভর্তুকিকেও বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে মনে করেন আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, ‘প্রতিবছরই ভর্তুকি থাকে, কিন্তু এবার ভর্তুকির পরিমাণটা অনেক বেড়েছে। এটা হয়তো আরও বাড়বে। অর্থমন্ত্রীও তেমন আভাস দিয়েছেন। সে জন্য আমরা চিন্তিত।’
বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে জানিয়ে আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘এ অবস্থায় বাজেটে ঘাটতির অর্থ কীভাবে জোগাড় করা হবে, সেটাও চ্যালেঞ্জ। আমাদের প্রায় ৯৫ হাজার কোটি টাকার বৈদেশিক ঋণ আনতে হবে। এটা সহজসাধ্য নয়। আর অভ্যন্তরীণ ব্যাংক খাত থেকে ১ লাখ ৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হবে। কিন্তু এত টাকা ব্যাংক থেকে তুলে নেওয়ার পর ব্যক্তি খাতের জন্য কতটুকু অবশিষ্ট থাকবে, সেটাও একটা চিন্তার বিষয়।’
আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সক্ষমতা আরও বৃদ্ধির তাগিদ দিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, এনবিআর তাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছে। কিন্তু তাদের সক্ষমতা আরও বাড়াতে হবে। এনবিআর কার্যকর ভূমিকা না রাখলে সব উন্নয়নকাজ মুখ থুবড়ে পড়বে।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম বলেন, বাজেটে যেসব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, সেগুলো ইতিবাচক। কিন্তু এর বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় আছে। বিভিন্ন সংস্থার প্রতিবেদনে প্রবৃদ্ধির হার ৭ শতাংশের নিচে ধরা হয়েছে। আর প্রস্তাবিত বাজেটে সাড়ে ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে। এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন একরকম অবাস্তব। এ ছাড়া রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে রাজস্ব বোর্ডের দক্ষতা ও করদাতার সংখ্যা বৃদ্ধির পরামর্শ দেন তিনি।
বিদেশি বিনিয়োগ প্রসঙ্গে মির্জ্জা আজিজ বলেন, যে দেশে স্থানীয় বিনিয়োগকারীরা বেশি বিনিয়োগ করেন, সেখানে এফডিআই বা বিদেশি বিনিয়োগও বেশি আকৃষ্ট হয়। অর্থাৎ বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধি করতে দেশে বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধির পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।
(আজকের সময়/এস এইচ/জুন ১৫, ২০২২)