পদ্মা সেতু প্রকল্পে ঋণ দেওয়ার চুক্তি করেও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সরে গিয়েছিল বিশ্বব্যাংক। পরে নিজস্ব অর্থায়নে দেশের সবচেয়ে বড় এই অবকাঠামো নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘পদ্মা সেতু শেখ হাসিনার স্বপ্নের সেতু। এই সেতু আমাদের সামর্থ্য ও সক্ষমতার সেতু। এই সেতু এক দিকে যেমন সম্মান ও মর্যাদার প্রতীক, অন্যদিকে আমাদেরকে যে অপমান করা হয়েছিল, সেই অপমানের প্রতিশোধ।’
২৫ জুন উদ্বোধনের পর ২৬ জুন সকাল ছয়টা থেকে পদ্মা সেতু যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে বলে জানান সেতুমন্ত্রী। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু এখন স্বপ্ন নয়, এটি দৃশ্যমান বাস্তবতা।
এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট, খালেদা জিয়া ও ড. মুহাম্মদ ইউনূস থেকে শুরু করে সবাইকে আমন্ত্রণ জানানোর চিন্তা করছি। নেত্রী (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) আমাদের সেভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন। আমন্ত্রণের প্রক্রিয়া প্রায় শেষ। আমন্ত্রণপত্র ছাপানো শেষ হয়েছে। বিদেশি যাদের আমন্ত্রণ করব, তাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আমন্ত্রণ জানানো হবে। আমরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেব। তারা পরে তাদের মতো করে পাঠাবে। আর খালেদা জিয়াকে আমরা চিঠি দেব। আগামী বৃহস্পতিবার থেকে আমন্ত্রণ জানানো শুরু করব।’
সেতুর টোল বেশি হয়েছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, সরকারের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে এই সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। ৩৫ বছরে সেতু বিভাগ সরকারকে ৩৬ হাজার কোটি টাকা পরিশোধ করবে। এ ছাড়া সেতুর রক্ষণাবেক্ষণের খরচ রয়েছে।
দেশে সাম্প্রতিক কয়েকটি অগ্নিকাণ্ড নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এগুলো অন্তর্ঘাত হতে পারে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। গোয়েন্দাদের কাছে কিছু খবর আছে। পদ্মা সেতুর উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে অন্তর্ঘাতের আশঙ্কা আমাদের আগেও ছিল, এখনো আছে।’
সেতুতে টোল কীভাবে আদায় করা হবে—সে প্রশ্নের জবাবে সেতু বিভাগের সচিব মো. মনজুর হোসেন বলেন, পদ্মা সেতুতে ম্যানুয়াল ও স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে টোল আদায়ের ব্যবস্থা থাকবে। একটি কাউন্টারে স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা থাকবে। এই ব্যবস্থায় যানবাহন টোল দেওয়ার জন্য থামতে হবে না। একধরনের কার্ড থেকে টোল কেটে রাখা হবে। তবে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি চালু করতে ছয় মাস সময় লাগতে পারে।
সেতুসচিব আরও বলেন, ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে নগদ টাকা প্রদান এবং ডেবিট/ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে টোল দেওয়া যাবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম ও এস এম কামাল হোসেন, দলের সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, পদ্মা সেতু প্রকল্পের পরিচালক মো. শফিকুল ইসলামসহ আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় নেতা।
(আজকের সময়/আইআই/জুন ১৩, ২০২২)